Safeda Farming- সবেদার জাত পরিচিতি এবং চাষ পদ্ধতি

আমাদের দেশে সবেদা পাকা ফল হিসাবে বেশি ব্যবহার হয়, কিন্তু ক্যারিবিয়ান দেশগুলোতে সবেদার আঠা নিষ্কাশন করে তা থেকে চিউইংগাম তৈরি করা হয়। পাকা সবেদা ফল খাদ্যগুণে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম ফলে রয়েছে ০.৭২ গ্রাম প্রোটিন, ২১.৪ গ্রাম শর্করা, ১.১ গ্রাম স্নেহ পদার্থ, ২৭ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ২৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ মিলিগ্রাম লৌহ এবং ৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ ।

স্বপ্নম সেন
স্বপ্নম সেন
Safeda farming procedure
Safeda farming (Image Credit - Google)

আমাদের দেশে সবেদা পাকা ফল হিসাবে বেশি ব্যবহার হয়, কিন্তু ক্যারিবিয়ান দেশগুলোতে  সবেদার আঠা নিষ্কাশন করে তা থেকে চিউইংগাম তৈরি করা হয়। পাকা সবেদা ফল খাদ্যগুণে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম ফলে রয়েছে ০.৭২ গ্রাম প্রোটিন, ২১.৪ গ্রাম শর্করা, ১.১ গ্রাম স্নেহ পদার্থ, ২৭ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ২৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ মিলিগ্রাম লৌহ এবং ৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ ।

জাত (Variety) -

ক্রিকেট বল বা ক্যালকাটা রাউণ্ড বা ঢাকাই, কালি বা কালিপাত্তি, বাদামী, নারকেলি, বারোমাসি

মাটি -

  • যে কোন ধরনের মাটিতে সবেদা সফল ভাবে চাষ জোড় করা যায়। এলা হিসাবে খিড়নি গাছ ব্যবহার করার ফলে সবেদা নোনা, খরা এবং জল বসা সহ্য করতে পারে।

  • সবেদা গাছের গোড়ায় বর্ষাকালে একটানা ১০-১৫ দিন জল জমে থাকলেও কোনো অসুবিধা হয় না।

  • কিছুটা নোনা সহনশীল, ফলে লবনাক্ত মাটিতেও সবদা গাছ ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে।

  • নোনা মাটিতে সবেদা গাছ বেঁচে থাকলেও লাভজনক ফলন পাওয়া সম্ভব হয় না।

পরিচর্যা ও সার (Crop Care) -

  • অন্যান্য ফল গাছের মত সবেদা গাছেও প্রতি বছর দুবার অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ- আষাঢ় মাসে প্রথম ও আশ্বিন- কার্ত্তিক মাসে দ্বিতীয়বার মোট সারের আধাআধি পরিমাণ প্রয়োগ করা উচিত। প্রতি গাছে ২০-৩০ কেজি জৈব সার প্রয়োগ করা উচিত। গাছের চারিদিকে গোলাকার অগভীর নালি কেটে ঐ নালিতে সার প্রয়োগ করে জলসেচ দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

  • চারা বসানোর একমাস আগে প্রতি গর্তে ২ ঝুড়ি বা ৪০ কেজি কমপোস্ট বা গোবর সার বা ৫০০ গ্রাম নিম খইল দিয়ে গর্তের মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে গর্ত ভর্তি করতে হবে। গাছের মধ্যবর্তী জমিতে শুঁটি জাতীয় সবজী চাষ করা ভালো। সার দেওয়ার পর বৃষ্টি না হলে বা মাটিতে রসের অভাব হলে উপযুক্ত পরিমাণে সেচ দেওয়া দরকার।

  • গ্রীষ্ম ও বর্ষায় জমিতে আগাছার প্রকোপ বাড়ে। তাই জমি যাতে আগাছামুক্ত থাকে তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

নীচু ধানজমিতে -

  • নীচু ধানজমিতে (নোনামাটি হলেও অসুবিধা নেই) ২৫ ফুট দূরত্বে ৩.৫ - ৪ ফুট উচ্চতার গোলাকার মাটির স্তূপ/ঢিবি তৈরী করতে হবে যার উপরের ব্যাস  ৫ ফুট এবং নিচের ব্যাস হবে ৮ ফুট। এই মাটি উক্ত জমি থেকেই সংগ্রহ করা হয়।

  • মে-জুন মাস এই স্তূপ/ঢিবি তৈরী করার উপযুক্ত সময়।

  • স্তূপ তৈরীর পরে সেগুলিকে একটা বর্ষা ফেলে রাখতে হবে। এতে স্তূপের মাটি ঠিকঠাক ভাবে বসে যাবে এবং মাটি নোনা হলে সেই লবন বৃষ্টির জলে ধুয়ে যাবে।

  • পরের ফেব্রুয়ারীতে (স্তূপ তৈরীর ৮ মাস পর) স্তূপের মাঝখানে ২ ফুট লম্বা,২ ফুট চওড়া ও ২ ফুট গভীর গর্ত করতে হবে।  গর্তগুলি কম্পোষ্ট সার বা ভার্মি কম্পোষ্ট এবং এস.এস.পি দিয়ে ভর্তি করে রাখতে হবে। মাটি বাহিত রোগ জীবানু দমন করার জন্য প্রতি কেজি জৈব সারের সাথে ১০ গ্রাম করে ট্রাইকোডারমা ভিরিডি ও সিউডোমোনাস ফ্লুরিসেন্স মেশানো দরকার। এই সঙ্গে ২৫০ গ্রাম নিমখোল প্রতি গর্তে মেশালে পোকার আক্রমন দমন হয়।

  • সেচের সুযোগ থাকলে এপ্রিল-মে মাসে, অন্যথায় জুন থেকে আগষ্ট মাসের মধ্যে ৭-৮ ফুট মাপের কলমের চারা প্রতিটি গর্তের ঠিক মাঝখানে সোজাভাবে বসাতে হবে। গাছ যাতে হেলে না যায় এজন্য বাঁশের লাঠি প্রতিটি চারার পাশে পুঁতে দিয়ে চারার অবলম্বন তৈরী করে দিতে হবে।

  • এই ভাবে একর প্রতি ৭০টি চারা গাছ বসানো যায়।

  • দুটি স্তূপের মধ্যবর্তী জমিতে চারা লাগানোর পর ৫-৬ বছর পর্যন্ত বর্ষার দিনে আমন ধান চাষ ছাড়াও সেচ ব্যবস্থা থাকলে রবি মরশুমে বেগুন, লঙ্কা, ঢ্যাঁড়শ, কুমড়ো গোত্রীয় সব্জী ইত্যাদি এবং সেচবিহীন অবস্থায় ডাল শস্যের (মুগ,খেসারী) চাষ করা যায়।

আরও পড়ুন - Gladiolus Flower Farming - কম খরচে গ্ল্যাডিয়লাস ফুলের চাষ করে কৃষকরা আয় করছেন প্রচুর অর্থ

এছাড়া স্তুপগুলির উপরিভাগ চওড়া হওয়ায় সবেদা যতদিন ছোটো থাকে ততদিন বর্ষাকালে স্তূপের উপর টমাটো, ভেণ্ডি, পালং, ধনেপাতা প্রভৃতির চাষ করা যেতে পারে বা কুমড়ো গোত্রীয় সব্জী যেমন লাউ, চাল কুমড়ো, মিষ্টি কুমড়ো, চিচিঙ্গে ইত্যাদিও লাগানো যেতে পারে যার মাচা দুই স্তূপের মাঝের ফাঁকা জমিতে তৈরী করতে হবে।

ফলন -

জোড় কলম দ্বারা উৎপন্ন সবেদার চারা গাছে ৩ বছরের মাথায় প্রথম ফলন পাওয়া যায় এবং প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে ফল দিয়ে যায়। ৭-১০ বছরের গাছে বছরে ১৫০০-২০০০ ফল পাওয়া যায়। প্রধানত বছরে দুবার , চৈত্র- বৈশাখ এবং ভাদ্র- কার্তিক মাসে সবেদা তোলা হয়।

আরও পড়ুন - Marigold Farming – গাঁদা ফুলের জাত ও লাভজনক চাষ কৌশল

Published On: 01 September 2021, 04:13 PM English Summary: Safeda fruit varieties and it's cultivation method

Like this article?

Hey! I am স্বপ্নম সেন . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters