কোভিড -১৯ মহামারীর সংক্রমণ বৃদ্ধির সাথে সাথে অর্থনৈতিক অবস্থাও সঙ্গিন হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। দেশের প্রায় সকল রাজ্যেই লকডাউনের পরিস্থতিতে কৃষক, শ্রমিক সহ সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক স্থিতির ক্রমশ অবনতি ঘটছে। কৃষকদের জন্য বেশ কিছু প্রকল্প থাকলেও লকডাউনের মাঝে তাতেও ভাটা পড়ছে।
২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী-কিষাণ প্রকল্পের প্রথম কিস্তির জন্য ৯ কোটিরও বেশি কৃষক পরিবারগুলির অপেক্ষা আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রক সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি (PM KISAN) -এর অধীনে যোগ্য কৃষক পরিবারগুলিতে প্রথম কিস্তি প্রেরণ করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। সাধারণত এপ্রিল-জুলাই মাসের মধ্যে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি পিএম কিষাণের অর্থ ২০০০ টাকার কিস্তি স্থানান্তর করা হয়, তবে আকস্মিক লকডাউনের পরিস্থতিতে এবারের অর্থ প্রেরণে "আরও কিছু দিন" সময় লাগতে পারে বলে সরকার সূত্রে জানা গেছে।
এই প্রকল্পের আওতায়, সরকার চলমান অর্থবছরে যোগ্য কৃষক পরিবারকে তিনটি সমান কিস্তিতে ছয় হাজার টাকা প্রদান করে।
প্রথম কিস্তিটি ১ লা এপ্রিল থেকে ৩১ শে জুলাইয়ের মধ্যে প্রেরণ করা হয়। বিগত বছর, বেশিরভাগ সুবিধাভোগী ২৪ শে মার্চ থেকে ২০ শে এপ্রিলের মধ্যে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই অর্থ পেয়েছিলেন। কিন্তু এই বছর, এপ্রিল মাস শেষ হয়ে গেলেও, কোনও কৃষক পরিবার কোনও রূপ অর্থ পায়নি।
বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে, কৃষি মন্ত্রকের এক কর্মকর্তা বলেন, " আমরা রাজ্যগুলির তালিকা যাচাই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য অপেক্ষা করছি এবং আরএফটি (Request for Transfer) সই করার প্রক্রিয়াটি শেষ করার অপেক্ষায় রয়েছি। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে অথবা আর কিছুদিনের মধ্যেই কিস্তি প্রেরণ করতে চলেছি।
প্রধানমন্ত্রী-কিষাণ নির্দেশিকা অনুসারে, স্টেট নোডাল অফিসাররা (SNO) যোগ্য কৃষকদের ডেটা যাচাই করে এবং তা সম্পন্ন হলে পোর্টালে সময়ে সময়ে তাদের ব্যাচে আপলোড করে। যাচাই করা তথ্যের উপর ভিত্তি করে, এসএনওরা মোট উপকারভোগীর সংখ্যায় থাকা আরএফটিগুলিতে স্বাক্ষর করে। পাবলিক ফিনান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (PFMS) এরপরে একটি তহবিল স্থানান্তর আদেশ (FTO) জারি করে, যার ভিত্তিতে কৃষি, সহযোগিতা ও কৃষক কল্যাণ বিভাগ উল্লিখিত পরিমাণের জন্য লেনদেনের আদেশ জারি করে এবং কিস্তিটি অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
"কোভিড -১৯ সংকটের কারণে ক্ষেতে কর্মরত কৃষকরাও যাচাই প্রক্রিয়াটি শেষ করতে আরও বেশি সময় নিচ্ছেন," বলে জানিয়েছেন সরকারের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেছেন যে, “আমরা অযোগ্য সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে অর্থ পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থাও শুরু করেছি। এতেও কিছুটা সময় ব্যয় হয়েছে। ”
আরও পড়ুন - এই রাজ্যের উন্নয়নের জন্য নাবার্ড ২৫০০ কোটি টাকা জারি করেছে
এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা গত বছরের ২৫ শে ডিসেম্বর যেমন করেছি, তেমন এবছরও এই সময়ে প্রায় ৯.৫ কোটি যোগ্য কৃষকের কাছে এপ্রিল-জুলাইয়ের কিস্তি স্বরূপ মোট ১৯,০০০ কোটি টাকা প্রেরণ করতে চলেছি। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ২০০০ টাকার কিস্তি সকল সুবিধাভোগী কৃষকের অ্যাকাউন্টে যোগ করব”।
আরও পড়ুন - আগামীকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন ঘোষণা করল রাজ্য সরকার
Share your comments