আয়ুষ্মান ভারত যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রীর কৃষি সম্মান নিধি যোজনার পর এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার মতামতের ভিন্নতার কারণে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য, ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান রেশন কার্ড’ কেন্দ্রীয় রেশন পরিকল্পনা রাজ্যে বাস্তবায়ন করতে অসম্মত হয়।
‘ওয়ান নেশন, ওয়ান রেশন কার্ড’ প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীরা ভারতের যে কোনও প্রান্তে রেশন শপ থেকে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য কিনতে পারবেন। এই সিস্টেমের আওতায় কোনও গরিব তাদের পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (পিডিএস) এনটাইটেলমেন্ট থেকে বঞ্চিত হবে না।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রের 'ওয়ান নেশন ওয়ান রেশন কার্ড' (ওএনওআরসি) প্রকল্পে যোগ দিতে স্পষ্টতই অসম্মত হয়। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুসারে, রেশন কার্ড সুবিধাভোগীদের নাম এখন তাদের আধার নম্বরের সাথে সংযুক্ত না করা থাকলেও রেশন কার্ড বাতিল করা হবে না। আধারের সাথে রেশন লিঙ্ক না থাকলেও সুবিধাভোগীরা রেশন পেতে থাকবে। কেন্দ্রীয় সরকার দেশব্যাপী লকডাউনের মধ্যে ৩ মাসের জন্য ১৫ কেজি চাল বিনামূল্যে দেওয়ার কথা পূর্বেই ঘোষণা করেছে। কিন্তু এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে কিছুদিন পরেই রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আমরা এই প্রকল্পের কথা শুনেছি কিন্তু স্কিমটি প্রয়োগের ক্ষেত্র আমরা কেন্দ্রের কাছ থেকে এখনও কোনও চিঠি পাইনি।
তথ্য অনুযায়ী, ১৭ টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ, গুজরাট, তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, কেরালার, কর্ণাটক, গোয়া, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা, বিহার, হিমাচল প্রদেশ এবং দামান-দিউ ইতিমধ্যে এক দেশ-এক রেশন কার্ড প্রকল্পের সাথে যুক্ত হয়েছে। বাকি রাজ্যগুলিও এই প্রকল্পে যোগদান করবে বলেই জানা গেছে। কিন্তু শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ এখনও পর্যন্ত অসম্মত।
খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা একটি রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা স্কিম ‘খাদ্য সাথী’ শুরু করেছি। আমরা ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রেশন কার্ডগুলির ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছি। কেন্দ্র কি আমাদের ২০০ কোটি টাকা দিতে পারে? কেন্দ্রের বকেয়া পরিমাণ ছাড়ার পরে আমরা এই প্রকল্পে যোগদানের বিষয়ে চিন্তা করব”। এছাড়া তিনি আরও জানিয়েছেন যে, কেন্দ্র থেকে জন প্রতি ৫ কেজি চাল/গম এবং পরিবার প্রতি ১ কেজি ডাল দেওয়ার কথা ঘোষণাই করা হয়েছে মাত্র। অথচ রাজ্যে যত পরিমাণ ডাল দরকার তা পাঠানো হয়নি। সুতরাং, এই প্রকল্পে যোগদান বিষয়ে আপাতত আমরা অসম্মত।
খাদ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন “জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা (এনএফএস) প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রায় ৫ কোটি মানুষকে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য দিচ্ছে। তবে তা ছাড়া, আরও ২ কোটি মানুষ, যারা আগে বিপিএল তালিকা থেকে বাদ ছিল, তারাও এনএফএসের সুবিধা পাচ্ছে। এছাড়া, জঙ্গলমহল ও সিঙ্গুরে চা বাগানের শ্রমিকরাও এই সুবিধা পাচ্ছেন”।
স্বপ্নম সেন
Share your comments