৮ এবং ৯ জানুয়ারী সারা দেশব্যাপী সেন্ট্রাল ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা সাধারণ ধর্মঘট সংঘটিত হতে চলেছে তাতে সমগ্র দেশের কৃষকরা অংশগ্রহণ করতে চলেছে। বলে রাখা ভালো এই সাধারণ ধর্মঘটটি সংঘটিত হতে চলেছে মোদী পরিচালিত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কিছু জনহিত বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে।
সর্বভারতীয় কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ”এ আই কে এস এবং ভূমি অধিকার আন্দোলন গোষ্ঠীর মানুষেরা গ্রামীণ হরতাল, রাস্তা রোকো ও রেল রোকো পরিচালিত করবে ৮ই ও ৯ই জানুয়ারী, এই দুই দিন যে সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নগুলি সারাদেশ ব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট সংঘটিত করতে চলেছে। এই আন্দোলন বিজেপি সরকারের গ্রামীণ দুর্দশা ও কর্পোরেটদের হাত থেকে গরীব কৃষকদের জমি বাঁচানোর যে ব্যার্থতা, তার বিরুদ্ধে বহু জনমত গড়ে তুলতে সক্ষম। গ্রামবাংলার সমস্ত কৃষকই এই ধর্মঘটকে সর্বান্তকরণে সমর্থন জানিয়েছেন এবং তারা এই ধর্মঘটকে সফল করার জন্য সমস্ত রকমের সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন।“
সি পি এমের আতুল কুমার অঞ্জন জানিয়েছেন যে কৃষকদের সক্রিয় কমিটির একটি বৈঠকে নির্ধারিত হয়েছে যে যখন সমস্ত স্তরের মানুষেরা এই সাধারণ ধর্মঘটে সায় দিয়েছে তখন কৃষকরাই বা বাদ যাবে কেন, তাই কৃষকরাও মোদী সরকারের নীতিগত চরম ব্যার্থতার প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং এই ধর্মঘটকে সর্বান্তকরণে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরও পড়ুন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বন্ধের ‘রমরমা’
অঞ্জন বলেছেন, “কৃষকরা সকাল থেকে রাস্তা জ্যাম, মিটিং, মিছিল ইত্যাদি কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করবে,তারা সমগ্র দেশ ব্যাপী ধর্মঘটকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য রাস্তায় নাম্বে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে এই মানুষগুলি বিগত চার বছরের মোদী সরকারের ব্যার্থতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বোঝানোর জন্য এতটা
তিনি আরও বলেছেন যে কৃষকরা এখন অনেকটাই সংঘবদ্ধ হয়েছেন এবং তার প্রমাণ আপনারা বিগত বৎসর ২৯ ও ৩০ শে নভেম্বরে সংঘটিত হওয়া বিশাল কৃষক আন্দোলন দেখেই বুঝতে পেরেছেন। আসলে অই দুই দিন তারা রাজধানীতে মোদী পরিচালিত কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের সারে চার বৎসরের ব্যার্থ শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। মোদী কৃষকদের দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করতে পারেন নি।
সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেছেন, বিভিন্ন সরকারী কর্মী, ব্যাঙ্ক, বীমা সংস্থার কর্মীবৃন্দ, অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা এবং পোর্ট ও ডক-এর কর্মীরা সারাদেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এই ধর্মঘট বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, ও অর্থনৈতিক ব্যার্থতা ইত্যাদি ইস্যুগুলিকেও নির্দেশ করে কেন্দ্রীয় বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন সমূহ ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাগুলিও একযোগে এই ধর্মঘটে সামিল হয়েছে।
সেন এই অবস্থার জন্য মোদী সরকারের অপশাসনকেই দায়ী করেছেন। এই সরকার মানুষের কর্মসংস্কৃতির প্রতি সুবিচার করতে পারে নি। দিনের পর দিন এই সরকার মানুষের পেটে লাথি মেরেই চলেছে।
তিনি আরও বলেন,”আমাদের সংগঠন আগামীদিনে আরও শক্তিশালী হবে, এবং মানুষের প্রয়োজনে এই আঠারোতম জাতীয় ধর্মঘটকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য সমস্ত রকমের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে সরকারের এই কর্মসংস্কৃতির অবমূল্যায়নের বিরুদ্ধে। আমাদের যে বারো দফা দাবী আছে যা কিনা আমাদের ভারতীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ও মানুষের মধ্যে সঠিক কর্মসংস্কৃতির আবহ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে।
প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো দেশের ১০ টি তাবর ট্রেড ইউনিয়ন এই সাধারণ ধর্মঘটকে সংঘটিত করছে, এদের মধ্যে প্রধান হল AITUC,AIUTUC , INTUC, HMS, CITU, UTUC, AICCTU, TUCC, LPF, SEWA ইত্যাদি।
- প্রদীপ পাল (pradip@krishijagran.com)
Share your comments