সরকার সাধারণত বছরে ২ বার ফসলের ন্যূনতম সহায়তার দাম বৃদ্ধি করে থাকে | একটি হলো, শীতে বপন করা শস্য বা রবি মৌসুমের আগে এবং গ্রীষ্মে-বপন করা খরিফ মৌসুমের জন্য যা সাধারণত জুনে শুরু হয়| কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গ্রীষ্মে বপন করা ফসলের ন্যূনতম সহায়তা মূল্য (এমএসপি) বাড়িয়েছে | কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার, কৃষকদের আবাদ ব্যয়ের চেয়ে যাতে কমপক্ষে ৫০% লাভ হয় তাই এইসব ফসলের দাম ১.৮% এবং ৬.৭% বৃদ্ধি করেছে |
নতুন দামগুলি কৃষকদের দ্বারা চলমান বিক্ষোভের মধ্যে এসেছে, বিশেষত পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে | যারা চায় সরকার ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে গৃহীত ৩টি কৃষি আইন বাতিল করে এবং এমএসপিদের আইনী সমর্থন দেবেন|
বুধবার ঘোষিত এমএসপিগুলি তেলবীজ এবং ডালের উচ্চমূল্য নির্ধারণ করে যা কৃষকদের প্রচুর পরিমাণে ভোক্ষ শস্য থেকে সরিয়ে নেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করছে | যার উৎপাদন ও সরবরাহ অপেক্ষাকৃত কম। উদাহরণস্বরূপ, ভারত দেশীয় চাহিদা মেটাতে তার উদ্ভিজ্জ তেলের দুই-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত আমদানি করে থাকে |
কৃষিমন্ত্রী তোমার (Narendra Singh Tomar) বলেন, "আমরা বলে আসছি যে এমএসপিতে কোনও সন্দেহ নেই। এমএসপি সিস্টেম রয়েছে এবং সেখানে থাকবে। নতুন হারে চাষের ব্যয়ের চেয়ে ৫০% থেকে ৬২% এর মধ্যে রিটার্ন দেওয়া হবে বলে তিনি জানান"|
এমএসপির মূল উদ্দেশ্য (Purpose of MSP):
এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ফসলের জন্য নির্ধারিত দাম বেঁধে দিয়ে কৃষকদের দারিদ্র এড়ানো এবং বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্য একটি নির্ধারিত রেট বেঁধে দেওয়া | কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রতিবাদী খামার ইউনিয়নগুলির সাথে আলোচনার দরজা বন্ধ করেনি। আমরা কথা বলতে রাজি এবং কৃষকদের কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের ১১ দফা আলোচনা হয়েছিল। আমরা কৃষকদের আইনটিতে নির্দিষ্ট আপত্তি তুলে ধরার আবেদন করেছি। সরকার এমএসপি হারে কৃষকদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে ভক্ষ্য শস্য কিনে এবং ভর্তুকি হারে পাবলিক বিতরণ পদ্ধতির মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ করে। এটি মূলত এমএসপি পদ্ধতিতে কৃষকরা উপকৃত হয়ে থাকেন |
তামিলনাড়ু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কৃষ অর্থনীতিবিদ কে এস মণি বলেছেন, প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন ও স্বল্প সরবরাহের মধ্যে দামের পার্থক্যের সাথে তিনি ব্যাপকভাবে একমত হয়েছেন। সরকার তেলবীজ এবং ডাল পর্যাপ্ত পরিমাণে কিনে ফেললে এটি কার্যকর হবে।
এমএসপি দাম বন্টন (MSP):
মূল ফসলের মধ্যে, ধানের জন্য এমএসপি ১৮৬৮ টাকা থেকে ১৯৪০ টাকা কুইন্টাল বেড়েছে যা ৩% বৃদ্ধি হয়েছে | জোয়ার ও বাজরার দাম বৃদ্ধি হয়েছে ১১৮ টাকা যা ২২৫০ থেকে ২৭৩৮ হয়েছে যা যথাক্রমে ২১% এবং ৫% বৃদ্ধি করা হয়েছে | মুসুর ও অড়হরের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০০ টাকা যা দাঁড়িয়েছে ৬৩০০ কুইন্টাল | বিগত বছরের তুলনায় সর্বাধিক বৃদ্ধি তৈলবীজ তিলের তেলের জন্য, যার এমএসপি ৪৫২ কুইন্টাল অথবা ৬৮৫৫ থেকে বেড়ে ৭৩০৭ টাকা প্রতি কুইন্টাল দাঁড়িয়ে |
পরবর্তী বৃহত্তম বৃদ্ধিটি হলো মসুর ডাল, ছোলার ডাল ও অড়হর দলের জন্য, যার এমএসপিতে প্রতি কুইন্টাল ৩০০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। চিনাবাদাম ও নাইজারসিডের দাম যথাক্রমে প্রতি কুইন্টাল ২৭৫ টাকা এবং কুইন্টাল প্রতি ২৩৫ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬২% পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন - Citrus Crop - লেবু গোত্রীয় ফসলে কৃমি জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ-এর সহজ উপায়
এমএসপি ঠিক করার জন্য, সরকার A2 + FL নামে একটি ব্যয়ের পরিমাণ ব্যবহার করে, যা চাষের ব্যয় এবং পারিবারিক শ্রমের মূল্য বোঝায় | কৃষকরা এমএসপির জন্য আইনী গ্যারান্টি দাবি করে যা c2 নামে একটি বিস্তৃত এবং আরও ব্যাপক পরিমাপের মাধ্যমে গণনা করা হয়, যার মধ্যে যন্ত্রপাতি সহ বিনিয়োগকৃত মূলধনের অনুমান ব্যয় এবং জমিতে ভাড়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - Mango exported Bahrain from India: ১৬ জাতের আম রপ্তানিতে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা
Share your comments