১১ই ডিসেম্বরে উত্তর ভারতের ৩ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে গোহারা হারের পর ভারতীয় জনতা পার্টির তথা বিজেপির আগামী ২০১৯ শে লোকসভা নির্বাচন জেতার জন্য এখন বিভিন্ন ধরণের যোজনা বানানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এর মধ্যেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার লোকসভা নির্বাচনের আগে এমন কিছু পদ্ধতি নিয়েছে, যা কিনা লোকসভা নির্বাচনে পাশা পালটে দিতে পারে।
মোদী সরকারের এই যোজনা কৃষকদের কৃষিঋণ মাফের থেকেই দুই কদম এগিয়ে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই যোজনাকে UBI scheam বা ইউনিভার্সাল বেসিক স্কিম বলে মনে করা হচ্ছে। এই যোজনায় দেশের সমস্ত প্রকার মানুষ, যেমন কৃষক, ব্যবসায়ী, এমনকি বেকার যুবকদেরও আওতার মধ্যে নেওয়া হয়েছে। এই যোজনার মাধ্যমে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা প্রতি মাসে ক্রেডিট হবে। কেন্দ্রীয় সরকার জিরো ব্যালেন্সের নাগরিকদের অ্যাকাউন্টে এই নির্দিষ্ট রাশি প্রতি মাসে ট্রান্সফার করে দেবে। জিরো ব্যালেন্স ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হল সেই মানুষদের যাদের কাছে অর্থ উপার্জনের কোনো রাস্তা নেই।
কিভাবে আসবে অ্যাকাউন্টে পয়সা
ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকামের আওতায় আস্তে হলে আধার নাম্বারের সাহায্য লাগবে। এই যোজনায় যে নিজেকে আনতে চাইবে তাঁকে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সাথে আধার নাম্বার যুক্ত করতে হবে তাহলেই প্রতি মাসে সরকার থেকে উক্ত রাশি তা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যাবে। এখন এই প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহস্থালীন কাজে ব্যবহৃত গ্যাসের সাবসিডি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এসে জমা হয়ে থাকে। কিন্তু মনে করা হচ্ছে যে ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম স্কিম চালু হবার সাথে সাথে সব ধরণের ভাতা বা সাবসিডি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
লন্ডনের প্রফেসরের ধারণা
ইউনিভার্সাল বেসিক স্কিমের ধারণা প্রথম প্রকাশ করেছিলেন লন্ডন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর গায় স্টিংডিং। যার ধারণা ও সূত্র অনুসারে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের আশেপাশে অবস্থিত ৮ টি গ্রামে পাঁচ বছরের জন্য একটি পাইলট প্রোজেক্ট চালানো হয়েছিলো। এই গ্রামগুলিতে মোট ৬০০০ লোকের বসতি রয়েছে। ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই পাইলট প্রোজেক্ট চালানো হয়েছিলো। এই প্রোজেক্টের সাহায্যে তখন ৫০০ টাকা করে প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা করা হয়েছিলো প্রতি মাসে। সেখানে স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাদেরকেও প্রতি মাসে পড়াশুনার খরচ বাবদ ১৫০ টাকা মাস প্রতি সরাসরি জমা করা হয়েছিলো। এই সরকারি অনুদান ঐ গ্রামগুলির মানুষের কাছে খুব কল্যাণকর হয়েছিলো।
- প্রদীপ পাল (pradip@krishijagran.com)
Share your comments