পুজোর পরের পেট সাফাই

পুজো, দুর্গাপূজা, শারদীয়া, আগাছানাশক, কলকাতা, ভিটামিন প্রয়োগ

KJ Staff
KJ Staff

দেখুন মাশাই সারা বছর ডায়েট-ডায়েট খেলাটা চলে ঠিকই। কিন্তু এই চারদিন নো নিয়ম-কানুন। শুধুই কবজি ডুবিয়ে খানাপিনা। কখনও মিত্র ক্যাফের ফিশ ফ্রাই, তো কখনও হাজি সাহেব, নয়তো আমিনিয়ার মটন বিরিয়ানি। মাঝে মাঝে রাস্তা ধারের ঘুগনি-ফুচকা তো আছেই! আর এমন তালগোল পাকানো খাবার-দাবার যখন সকাল-বিকাল চলতে থাকে, তখন পেট বাবাজি যে কখনও সখনও রান আউট হবেই হবে, তা তো বলাই বাহুল্য! এই কারণই তো বলছি বন্ধু পুজোর চারদিন যা কিছুই খান না কেন ক্ষতি নেই, সঙ্গে শুধু এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলি খাওয়াও শুরু করতে হবে। তাহলেই দেখবেন পেট বাবাজি সদা চাঙ্গা থাকবে।

আসলে এই প্রবন্ধে এমন কিছু প্রকৃতিক উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, যা খাওয়া শুরু করলে গ্যাস-অম্বল থেকে বদহজম, যে কোনও ধরনের পেটের রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে পুজোর কটাদিন বেশ আনন্দেই কেটে যায়। তাই তো বলি বন্ধু, আর অপেক্ষা নয়, চলুন খোঁজ লাগানো যাক সেই সব প্রাকৃতিক মহৌষধিগুলি সম্পর্কে, যারা পেটকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে যে যে প্রাকৃতিক উপাদানগুলি দারুন কাজে আসে সেগুলি হল - 

 ১. লবঙ্গ: একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! এই প্রকৃতিক উপাদানটি যে কোনও ধরনের ডাইজেস্টিভ ডিজঅর্ডারের চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো পেটকে ঠান্ডা রাখতে নিয়মিত লবঙ্গ খাওয়া পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। আসলে লবঙ্গের শরীরে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে গ্যাস-অম্বল সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি মুখের দুর্গন্ধও দূর হয়।

 ২. জিরা: পরিমাণ মতো জিরা নিয়ে এক কাপ গরম জলে ফেলে জলটি পান করুন। তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে! কারণ অনিয়ন্ত্রিত খাবার খাওয়ার কারণে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো বলি বন্ধু, পুজোর চারদিন যদি পেটকে ঠান্ডা রাখতে হয়, তাহলে জিরার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ভুলবেন না যেন!

৩. দারচিনি: এবার থেকে যখনই অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে, তখনই অল্প করে দারচিনি খেয়ে নেবেন। দেখবেন কষ্ট কমতে একেবারেই সময় লাগবে না। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদনটির অন্দরে থাকা একাদিক উপকারি উপাদান একদিকে যেমন হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়, তেমনি পেটের সংক্রমণের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে ঠিক মতো হজম না হওয়ার সমস্যা কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে অল্প করে দারচিনি দিয়ে তৈরি চা খেলে দেখবেন দারুন উপকার মিলবে।

 ৪. তুলসি পাতা: একেবারে ঠিক শুনেছেন। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমাতে তুলসি পাতা দারুন কাজে আসে। এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা খুব অল্প সময়ে অ্যাসিডিটিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তাই তো নিমেষে এমন রোগের প্রকোপ কমাতে ৩-৫ টি তুলসি পাতা জলে ভিজিয়ে, সেই জল ফুটিয়ে খেয়ে ফেলুন। দেখবেন চোখের পলকে অ্যাসিডিটি কমে যাবে।

 ৫. অ্যালো ভেরা: এতে উপস্থিত নানাবিধ খনিজ একদিকে যেমন ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, অ্যালো ভেরায় উপস্থিত অ্যাসিড, স্টমাকে তৈরি হওয়া অ্যাসিডের কর্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

 ৬. গুড়: শুনতে অবাক লাগলেও অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে বাস্তবিকই এই খাবারটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে গুড়ের অন্দরে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, ইন্টেস্টাইনের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতে, দেহের অন্দরে তাপমাত্রা ঠিক রাখতে এবং স্টমাকের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই কারণেই তো সারা বছর গুড়ের সরবত খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

৭. মৌরি: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাসিডিটির প্রকোপ কমাতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে মৌরির অন্দরে থাকা বিশেষ এক ধরনের তেল পাকস্থলির কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বদ-হজম এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না।

 ৮. খাবার সোডা: খাবার প্লেটে ঝড় তোলার কারণে কি অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়েছে? তাহলে কাজে লাগান এই ঘরোয়া পদ্ধতিটিকে। এক্ষেত্রে এক গ্লাস জলে ১ চামচ খাবার সোডা মিশিয়ে সেই জল পান করুন। প্রতিদিন এই মিশ্রনটি পান করলে দেখবেন আর কোনও দিন অ্যাসিডিটি হবে না। আসলে এই পানীয়টি অ্যান্টাসিডের কাজ করে থাকে। এই কারণেই তো এমন ধরনের সমস্যা কমাতে এই উপাদানটিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

 ৯. বাদাম: আপনি কি প্রায়শই অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগে থাকেন? তাহলে খাবার পরপরই ২-৩ টি বাদাম খেয়ে নিতে ভুলবেন না। কারণ এমনটা করলে এমন ধরনের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সম্ভাবনা কমে। আসলে বাদামে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং অ্যালকেলাইন কমপাউন্ড, যা স্টামক অ্যাসিডিটির জন্য দায়ি অ্যাসিডদের ক্ষতি করার ক্ষমতা একেবারে কমিয়ে দেয়। ফলে গ্য়াস-অম্বলের কষ্ট কমতে সময় লাগে না।

 ১০. রসুন: অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে রসুনের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে এক কোয়া রসুন খেয়ে ফেললেই স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে শুরু করে দেয়। ফলে গ্যাস-অম্বল সংক্রান্ত নানা লক্ষণ ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে।

 ১১. ডাবের জল: শরীরে জলের ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ স্বাভাবিক করতেও ডাবের জল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, শরীরে উপস্থিতি অতিরিক্ত অ্যাসিডকে বের করে দিতেও এই প্রাকৃতিক উপাদানটি বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। তাই তো অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পুজোর চার দিন ডাবের জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

- Sushmita Kundu

Published On: 23 October 2018, 05:26 PM English Summary: Dieting after pujo

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters