নদীয়া জেলার হরিণঘাটা ব্লকের হাড়িপুকুরিয়া গ্রামের বর্ধিষ্ণু কৃষক মাঝবয়সী জামালুদ্দিন মিঞা - দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে সবজি চাষ করে আসছে জামালুদ্দিন, এলাকায় সফল কৃষক তো বটেই, অন্যান্য কৃষকভাই দের কাছে কৃষি সংক্রান্ত সমস্যায় জামালুদ্দিন-ই ত্রাতা। কারণ, ফসল এর রোগ নির্ণয় করার এক সুন্দর ক্ষমতা ছিল জামালুদ্দিন-এর।
ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ করলেও জামালুদ্দিন এর আয়ের মূল সূত্র ছিল লংকা চাষ। কিন্তু বিগত মরশুমে হঠাৎই লংকা পাতা নষ্ট হতে শুরু করে। প্রথমে নিজের অভিজ্ঞতায় কিছু ওষুধ প্রয়োগ করলেও বিশেষ কাজে আসে নি। এদিকে লকডাউন শুরু হওয়ার জন্য পেশাদারি কৃষি বিশেষজ্ঞ দেরও সরাসরি সাহায্য পায়নি। দিশেহারা হয় পরে জামালুদ্দিন ।
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন -এর সহায়তা (Reliance Foundation) -
এই অবস্থায় জামালুদ্দিন এর পাশে দাঁড়ায় রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন। নিঃশুল্ক হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে কৃষি বিশেষজ্ঞ-এর সাথে যোগাযোগ করার পাশাপাশি নিয়মিত হোয়াটস্যাপ গ্রূপ এর মাধ্যমেও পরামর্শ এবং ভার্চুয়াল ট্রেনিং এর মাধ্যমেও সরাসরি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞের সাথে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ নিয়ে অবশেষে লংকার খেত বাঁচায় জামালুদ্দিন।
হিসেবে করে দেখা গেছে, প্রায় ১০,০০০/- টাকার ফসল রক্ষা পায় রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন-এর হেল্পলাইন পরামর্শের মাধ্যমে। আজ জামালুদ্দিন একজন সফল কৃষক তো বটেই, আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে কয়েক গুন। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন পরিবার এভাবেই হাজার হাজার কৃষক ভাইদের কাছে হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিচ্ছে পেশাগত কৃষি পরামর্শ।
আর এক কৃষকভাই আলাউদ্দিন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন -এর পরিষেবায় পটল -এর ক্ষেত বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হরিণঘাটা ব্লকের অন্তর্গত হাড়িপুকুরিয়া গ্রামের প্রবীণ কৃষক আলাউদ্দিন মিঞা। ছোট বেলা থেকেই পারিবারিক জীবিকা কৃষির সাথে যুক্ত। অষ্টম শ্রেণী পাশ করার পর পেশাগত ভাবে কৃষির সাথে জড়িয়ে পরে - প্রায় ৩০ বছর কৃষির সাথে যুক্ত আলাউদ্দিন ভাই। শুধু নিজের সমস্যাই নয়, এলাকায় অন্যান্য কৃষকদের সমস্যার ক্ষেত্রেও শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা- আলাউদ্দিন ভাই-ই ভরসা। এহেন আলাউদ্দিনই লকডাউন এর সময় গভীর সমস্যা পরে নিজের আড়াই বিঘা পটল-এর ক্ষেত নিয়ে।
ধানের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে আলাউদ্দিন ভাই সবজি চাষও করে। কারণ হরিণঘাটা ব্লকের মাটি অত্যন্ত উর্বর। বিভিন্ন সবজির মধ্যে পটল টাই বেশি করে ফলে আলাউদ্দিন। কিন্তু হঠাৎই পটোল-এর পাতা নষ্ট হতে শুরু করে এবং শিকড় পচতে থাকে। প্রথমে নিজের অভিজ্ঞতায় কিছু অসুধ প্রয়োগ করলেও সেটা বিশেষ কাজে আসে নি। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য , আলাউদ্দিন ভাই বিগত দু'বছর ধরে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর বিভিন্ন কৃষি সম্পর্কিত অনুষ্ঠানের একজন নিয়মিত অংশগ্রহণকারী এবং হেল্পলাইন পরিষেবার নিয়মিত প্রাপক। স্বাভাবিকভাবেই, এই পরিস্থিতিতে নিঃশুল্ক হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০ ৪১৯ ৮৮০০ তে যোগাযোগ করে এবং ফাউন্ডেশন এর কৃষি বিশেষজ্ঞর পরামর্শ চায়। এরপর রোগের প্রকৃতি অনুধাবন করে কৃষি বিশেষজ্ঞ প্রয়োজনীয় অসুধ এর সুপারিশ করেন। অসুধ প্রয়োগের এক সপ্তাহের মধ্যেই পটল গাছ আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এবং পাতা গুলোও সবুজ সতেজ আকার ধারণ করে।
আরও পড়ুন - Orchid Farming: আধুনিক পদ্ধতিতে উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে অর্কিডের চাষ
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর পরিষেবায় প্রত্যয়ী আলাউদ্দিন ভাইয়ের কথায় " করোনা পরিস্থিতির জন্য দীর্ঘ লকডাউন-এর জন্য এমনিই আর্থিক অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। তারপর পটল খেত নষ্ট হয় গেলে নিদারুন অর্থসংকটে পড়তাম। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন পাশে থাকার জন্য প্রায় আড়াই বিঘার ফসল বাঁচাতে পেরেছি। শুধু তাই নয়, লকডাউন-এর সময় কিভাবে কৃষি ফসল বিক্রি করতে পারবো, সেই পরামর্শও ফাউন্ডেশন-এর স্যার রা আমাদেরকে দিয়েছেন। আমি ওই ফসল বিক্রি করে মোটামুটি ২০০০০ টাকা মত লাভ করেছি। আজ আমি একজন সফল কৃষক। ধন্যবাদ রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন আমাদের কৃষক পরিবারের পাশে থাকার জন্য" ।
আরও পড়ুন - IFFCO প্রচলন করল ন্যানো ইউরিয়া তরল, জানুন এর দাম, উপকারিতা এবং ফসলের উপর প্রভাব সম্পর্কে
Share your comments