বরগুনার সদর উপজেলার কালির তবক গ্রামের কৃষক আবদুল মান্নান মাচায় তরমুজ চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন | অসময়ে তরমুজ চাষ (watermelon cultivation) করে দ্বিগুণ লাভের কথা ভাবছেন তিনি। তার মাচায় এমন তরমুজ চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এটি চাষের পরিকল্পনা নিয়েছেন। আবদুল মান্নানের ছোট ছেলে বনি আমিন অনেক বছর ধরেই তরমুজ পরিবহন শ্রমিক হিসাবে কাজ করছেন। টেলিভিশনে মাচায় তরমুজ চাষের প্রতিবেদন দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়ে এটি চাষের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
কিভাবে চাষ শুরু করেন তারা(How they started)?
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শ নিয়ে অসময়ে মাচায় তরমুজ চাষ শুরু করেন তারা। খামারটি প্রতিষ্ঠার পেছনে আবদুল মান্নানের স্ত্রী রোফেজা বেগমও দিন-রাত পরিশ্রম করেন। তাদের এ তরমুজ চাষ অসময়ে হলেও প্রথমবারেই সাবইকে চমকে দেন তারা। সাধারণত শীতকালে বরগুনার বিভিন্ন এলাকার জমিতে তরমুজের চারা রোপণ করা হয় এবং তা বিক্রি করা হয় গ্রীষ্মকালে। কিন্তু কালিরতক গ্রামের আবদুল মান্নান চলতি বছরে এপ্রিল থেকে শুরু করে জুন অর্থাৎ বর্ষাকালে ৮০ শতাংশ জমিতে সরাসরি বেঙ্গল টাইগার, কারিশমা ও কানিয়া জাতের তরমুজের বীজ বপন করেন।
বৃষ্টির জলে বীজ যেন পচে নষ্ট না হয় সেজন্য উন্নতমানের পলিথিন ব্যবহার করেন তারা। যার ফলে অল্প সময়ের মধ্যে বীজ অঙ্কুরোদগম হয়ে চারা বেরিয়ে আসে। বর্তমানে মাচায় এখন অনেক তরমুজ ঝুলছে। প্রতিটি তরমুজ ৫-৬ কেজি ওজনের। লাল ও হলুদ বর্ণের এ তরমুজগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও অনেক সুস্বাদু।
আরও পড়ুন - Weather Update: দক্ষিণবঙ্গে আজও বৃষ্টির পূর্বাভাস, রবিবার থেকে বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা
সাফল্যের কাহিনী:
তরমুজ চাষি আবদুল মান্নান জানান, অসময়ে মাচায় তরমুজ চাষের কথা শুনে অনেকেই ভুল সিদ্ধান্ত বলে ভেবেছিল। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের বললে তারা সঠিক পরামর্শ দেন। পরে তাদের দেখানো পদ্ধতি প্রয়োগ করে জমিতে বীজ বপন ও পরিচর্যা করে তারা সাফল্য (Successful farmer) পেয়েছেন |মাচায় তরমুজ চাষ করে আবদুল মান্নানের সফলতা দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে দূর থেকে প্রতিদিন মানুষ তরমুজ ক্ষেত দেখতে আসেন। স্থানীয় চাষি এমনকি গ্রামীণ বেকার যুবকরা এগিয়ে আসছেন তরমুজ চাষে |
তার জমিতে জন্মানো তরমুজ-র স্বাদ খুবই মিষ্টি | অসময়ে এই তরমুজ চাষ তার পকেট যে ভরবে সে নিয়ে কোনো দ্বিধাবোধ নেই | বর্ষার এই তরমুজ চাষ কৃষক আব্দুল মান্নান ও তার পরিবার নিতান্তই লাভের মুখ দেখবেন |
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মাচায় তরমুজ চাষে উৎপাদন খরচ খুব একটা বেশি না। তবে নিয়মিত ক্ষেতের যত্ন নিতে হবে। নতুন এই পদ্ধতি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে তরমুজ চাষে কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হবেন | জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, এখানে যে নতুন উদ্যোগে নতুন প্রযুক্তিতে অসময়ে তরমুজ চাষ ও অন্যান্য কৃষি কাজ শুরু হয়েছে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। তাদের আশা এভাবেই বাংলাদেশের কৃষিকাজ এগিয়ে যাবে এবং কৃষকরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে | এর পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিরও ব্যাপক উন্নতি ঘটবে |
আরও পড়ুন -CSIR Recruitment: কাঁচ গবেষণা কেন্দ্রে গ্রূপ- সি কর্মী নিয়োগ, দেখুন বিস্তারিত তথ্য
Share your comments