Mola Fish Farming: পুকুরে মলা মাছ চাষ করতে চান? শিখে নিন দারুন পদ্ধতি

মলা মাছ এক ধরণের দেশীয় প্রজাতির মাছ | খাওয়ার দিক দিয়ে এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি এই মাছের পুষ্টিগুণ অধিক | তাই, বেশিরভাগ ডাক্তাররা মলা মাছ খেতে রোগীদের পরামর্শ দেন। সাধারণত, আমাদের দেশের খাল-বিল কমে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে এখন মলা মাছ তেমন একটা চোখে পরেনা । কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি আবিষ্কার হওয়ার ফলে মলা মাছ এখন বড় পরিসরে চাষাবাদ শুরু হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

KJ Staff
KJ Staff
Mola fish farming
Mola Fish (Image Credit - Google)

মলা মাছ এক ধরণের দেশীয় প্রজাতির মাছ | খাওয়ার দিক দিয়ে এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি এই মাছের পুষ্টিগুণ অধিক | তাই, বেশিরভাগ ডাক্তাররা মলা মাছ খেতে রোগীদের পরামর্শ দেন। সাধারণত, আমাদের দেশের খাল-বিল কমে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে এখন মলা মাছ তেমন একটা চোখে পরেনা । কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি আবিষ্কার হওয়ার ফলে মলা মাছ এখন বড় পরিসরে চাষাবাদ শুরু হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এই মাছ চাষ (Fish Farming) করে কৃষকরা ভালো টাকা অর্থ উপার্জন করতে পারেন | এই নিবন্ধে কিভাবে পুকুরে মলা মাছ চাষে প্রয়োজনীয় করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো;

মলা মাছের পোনা পরিবহন করা একটি অত্যন্ত জটিল পদ্ধতি  | এবং রেনু পরিবহন করা অত্যন্ত সহজ  | তাই রেনু নিয়ে নিজে পোনা তৈরি করে চাষাবাদ করাই সবচেয়ে শ্রেয়। এতে খরচ ও ঝুঁকি দুটোই অনেক কম। এই পদ্ধতি অবলম্বনে অনায়াসে স্বল্প খরচে মলা মাছ চাষ (Mola fish cultivation) করা যায়।

পুকুর প্রস্তুতি (Pond preparation):

প্রথম দিন থেকে, ৭ থেকে ৮ দিন পর রেনু ছাড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে প্রথমে পুকুরে বিষটোপ ব্যবহার করতে হবে | যাতে, পুকুর থেকে সব রাক্ষুসে মাছ মেরে ফেলা যায়। তারপর পুকুরের সব জল সেচ দিয়ে ফেলে দিতে হবে। যদি পুকুর আকৃতিতে বড় হয় তাহলে সব জল অপসারণ করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে উঠতে পারে। এক্ষেত্রে অর্ধেক জল ফেলে দিয়ে পরিস্কার জল দিয়ে ভরে দিতে হবে। যদি কোনো জল পরিবর্তন করার সুযোগ না থাকে তাহলেও চলবে | সেক্ষেত্রে চুনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। বিষটোপ প্রয়োগের দ্বিতীয় দিন শতাংশ প্রতি আধা কেজি চুন জলে গুলে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

যদি পুকুর বেশি পুরোনো হয় এবং জল পরিবর্তন করার সুযোগ না থাকে সেক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি ১ কেজি পরিমাণ চুন দেওয়া ভালো। বিষটোপ প্রয়োগের ষষ্ঠ দিনে হাসপোকা মারার জন্য সুমিথিয়ন ব্যবহার করতে হবে । ০.৩ পিপিএম মাত্রায় সুমিথিয়ন ব্যবহার করতে হবে। অনেক বিশেষজ্ঞরা  হাসপোকার মারার জন্য অন্য ঔষধ ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে, মলা মাছের ক্ষেত্রে সুমিথিয়ন ভালো। সুমিথিয়ন সন্ধ্যা বেলায় প্রয়োগ করতে হবে। এর ২ দিন পর পুকুরে রেনু ছাড়তে হবে।

রেনু ছাড়ার পদ্ধতি:

প্রথমে জল ভর্তি রেনুর ব্যাগ পুকুরের জলে আধাঘণ্টা ভাসিয়ে রাখতে হবে | কারণ, পুকুরের জলের  তাপমাত্রা সামঞ্জস্য হওয়ার জন্য। আধাঘণ্টা পর ব্যাগের মুখ খুলে ব্যাগের জলের ভিতর হাত ঢুকিয়ে এবং পরে পুকুরের জলে হাত ঢুকিয়ে ব্যাগ ও পুকুরের জলের তাপমাত্রা যখন একই মনে হবে তখন পুকুরের জল  দিয়ে অল্প অল্প করে ব্যাগে ঢুকিয়ে আবার বের করে এভাবে রেনু ধীরে ধীরে ছাড়তে হবে। যাতে, রেণুগুলি পুকুরের জলের সাথে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারে |

খাদ্য (প্রাথমিক পর্যায়) (Food):

রেনু ছাড়ার ২ ঘণ্টা পর খাবার দিতে হবে। দিনে ২ বার খাবার দিতে হবে। সকাল ১০টার দিকে এবং বিকাল ৫টার সময়। খাবার হিসেবে প্রথম ২ দিন ডিম ( সাদা অংশসহ) খেতে দিতে হবে। এ জন্য প্রথমে হাঁসের ডিম সিদ্ধ করে ব্লেন্ডার দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে পলেস্টার কাপড় দিয়ে ছেঁকে মিহি মতো করে জলের সাথে মিশিয়ে পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে।

প্রতি ৫ শতাংশে ১ টি করে ডিম দিতে হবে। তৃতীয়দিন থেকে নার্সারি পাউডার ৩-৬ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রেখে পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। প্রতি ১০ শতাংশে ১ কেজি খাবার দিতে হবে দিনে ২ বার ভাগ করে। ১০ দিন পর খাবার প্রতি ১০ শতাংশে ১.৫ কেজি খাবার দিতে হবে। এভাবে চলবে ২০ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত। এরপর খাদ্য প্রয়োগের কৌশল বদলাতে হবে।

খাদ্য (দ্বিতীয় পর্যায়):

পরিবর্তিত খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি ২৫ দিন পর থেকে ১ সপ্তাহের খাবার এক সাথে পুকুরে ভিজিয়ে রেখে খাওয়াতে হবে। যেহেতু মলা মাছ ফাইটোপ্লাংকটন ভোজী তাই একটু ভিন্নভাবে খাবার দেওয়া দরকার। ধরা যাক ১ সপ্তাহের জন্য ১০০ কেজি খাবার প্রয়োজন।

পরিচর্যা:

এইসময় আর নার্সারি পাউডারের মতো দামি খাবার খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। তাই ১০০ কেজি সর্ষের খোলকে  ৭ টা বস্তায় সমান ভাগ করে প্রতি বস্তায় ৪ কেজি ইউরিয়া সার খোলের সাথে মিশিয়ে জলে  খুঁটিতে বেঁধে রাখলে ৩ দিন পর এই খোলের বস্তা জলে ভেসে উঠবে। তারপর এক এক বস্তার খোল  প্রতিদিন ২ বেলা দিতে হবে। এতে প্লাংকটনের বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছের খাবার ভালো মানের হবে।

আরও পড়ুন - Profitable Agriculture- কীভাবে পশুপালন থেকে বেশী আয় করবেন, রইল সহজ উপায়

মাছ আহরণ:

এভাবে সাড়ে ৩ মাস থেকে ৪ মাসেই বাজারজাত করা যায় মলা মাছ। মলা মাছের বাজারজাত দাম ভালো হওয়ায় কৃষকরা আর্থিক দিক থেকে লাভবান হন |

নিবন্ধ: রায়না ঘোষ

আরও পড়ুন - Profitable Goat Rearing - এই প্রজাতির ছাগল পালন আপনাকে দেবে সবচেয়ে বেশী মুনাফা

Published On: 14 June 2021, 11:33 AM English Summary: Mola Fish Farming: Want to cultivate Mola fish in the pond? Learn great methods

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters