অনেকেই এটা লক্ষ্য করে থাকে যে, চাষবাসকে ভালবেসে কৃষিবিজ্ঞান পড়তে আসার সংখ্যাটা কম। তবে, বর্তমান সময়ে এই কোর্সে বেশ আগ্রহ হচ্ছে অনেকেই | কৃষিবিজ্ঞান পড়তে আসার সবচেয়ে বড় কারণ প্রচুর চাকরির সুযোগ। কেন্দ্রীয় স্তরে আইএস হতে চাইলে কৃষিবিজ্ঞান স্পেশাল পেপার নেওয়া যায়।
ইউপিএসসি দিয়ে মিনিস্ট্রি অফ এগ্রিকালচার দফতরে চাকরি পাওয়া যায়। এছাড়াও ইসরো, ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার, ডিআরডিও, ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিস-সহ কেন্দ্রীয় স্তরে একাধিক দফতরে চাকরি পাওয়া যায়। ইফকো (ইন্ডিয়ান ফার্মার্স ফার্টিলাইজার কো-অপারেটিভ লিমিটেড), কৃষক ভারতী কো-অপারেটিভ, সেন্ট্রাল সিল্ক বোর্ড, টি বোর্ড, কফি বোর্ড, রাবার বোর্ড, কোকোনাট বোর্ড, স্পাইস বোর্ডগুলিতে চাকরি আছে।
কৃষিবিজ্ঞান নিয়ে কেন পড়বেন?
সাধারণত, এই রাজ্যে চাকরি করতে চাইলে রাজ্য কৃষি দফতরে প্রচুর সুযোগ রয়েছে । ডব্লিউবিসিএস-এ কৃষিবিজ্ঞান স্পেশাল পেপার হিসবে নেওয়া যায়। যদি আপনি পড়াতে চান, তবে অনেক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। স্কুলে ভোকেশালান কোর্সে কৃষিবিজ্ঞান পড়ানো যায়। জেনারেলে ওয়ার্ক এডুকেশনের একটা ভাগ কৃষিবিজ্ঞান। এছাড়াও কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রগুলিতে চাকরি আছে। রামকৃষ্ণ মিশনের মতো বেশ কিছু বড় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় চাকরি পাওয়া যায়।
আর চাকরির মধ্যে না গিয়ে যদি গবেষণা করতে চান তাহলে সেখানেও প্রচুর সুযোগ, নানা ধরনের ফেলোশিপের বন্দোবস্ত রয়েছে । দেশের মধ্যে আইআইএসইআর, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স- বেঙ্গালুরু, বোস ইনস্টিটিউট ইত্যাদি। বিদেশের মধ্যে অষ্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ, ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউট-সহ একাধিক জায়গায় গবেষণার সুযোগ রয়েছে।
কোথায় পড়বেন (Agriculture Institutes)?
পশ্চিমবঙ্গে তিনটি জায়গায় কৃষিবিজ্ঞানে ব্যাচেলর্স কোর্স পড়ানো হয়—বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বভারতীর পল্লি শিক্ষাভবন। তিনটি জায়গাতেই মাস্টার্স ও পিএইচডি করা যায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র মাস্টার্স ও পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে।
যোগ্যতা কি লাগে (Educational Qualification)?
উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান থাকাটা আবশ্যক। তবে, গণিত না থাকলেও চলবে। ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদের (আইসিএআর) নির্দেশিকা অনুযায়ী কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর চাওয়া হলেও বাস্তবে মেধাভিত্তিক তালিকায় ৮০ শতাংশের নীচে নম্বর পেলে জায়গা পাওয়া যায় না। অন্য বোর্ডের জন্য আসন সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়াও আইসিএআর দেশজুড়ে সমস্ত অনুমোদিত কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির জন্য পরীক্ষা নেয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে ওই এন্ট্রান্স টেস্টের ফর্ম বেরোয়।
কোর্সের সময়সীমা:
বিএসসি এগ্রিকালচার চার বছরের কোর্স। শেষ বছরটায় মাঠে-ক্ষেতে গিয়ে কাজ করতে হয়, যার পোশাকি নাম রুরাল এগ্রিকালচারাল ওয়ার্কিং এক্সপেরিয়েন্স। মাস্টার্স দু’বছরের। পিএইচডি তিন থেকে দশ বছরের মধ্যে শেষ করতে হয়। পুরোটাই সেমিস্টারভিত্তিক।
খরচ কত?
সরকারি ব্যবস্থায় সামান্যই খরচ। আটটি সেমিস্টার। আর,সরকারি তে সেমিস্টারের খরচ যেমন কম তেমনি হস্টেলের খরচও খুবই কম।
আপনিও, এই কোর্স নিয়ে পড়তে পারেন | কৃষিবিজ্ঞান কোর্সের মূল সুবিধাই হলো চাকরি, এই কোর্স শেষে রয়েছে প্রচুর সুযোগও |
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - জমির জলাবদ্ধতা কাটিয়ে সব্জি চাষ করতে চান? জেনে নিন বস্তা চাষ পদ্ধতি
Share your comments