
করোনা আবহে (Corona Virus) শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে শুধু বিভিন্ন ভিটামিন খাওয়া উচিত নয় সামগ্রিকভাবে দেহরক্ষীর ভূমিকা পালন করে ভিটামিন। এই করোনার আবহে যার চাহিদা দ্বিগুণ। তবে মুঠো মুঠো মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেটের চেয়ে প্রতিদিন একটা সুষম খাদ্যতালিকা মেনে চললে তা থেকেই প্রয়োজনীয় ভিটামিনের (Vitamin) চাহিদা পূরণ হতে পারে। দেখে নিন আপনার প্রতিদিন খাবারের (Daily-diet) পদে কোন কোন ভিটামিন রাখতে পারেন এবং কতটা পরিমানে,
সকালে ঘুম থেকে উঠে(Morning):
দিন শুরু করুন কোনও ভেষজ ডিটক্স ওয়াটার বা গরম জলে লেবু ও মধু মিশিয়ে খেয়ে। তবে মধু কিন্তু খুব গরম জলে মেশালে একটি রাসায়নিক যৌগ তৈরি করে, যার নাম এইচএমএফ(HMF )। এটা দীর্ঘদিন শরীরে প্রবেশ করলে ক্ষতি। কার্সিনোজেনিক উপাদান। এছাড়া লেবুতে উপস্থিত ভিটামিন সি-ও কিন্তু অধিক উষ্ণতায় নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন অল্প উষ্ণ জলে লেবু ও মধু খেতে হবে। মধুতে রয়েছে ভিটামিন সি, B5, নায়াসিন, বি২ এবং আরও অনেক ফাইটোক্যামিকালস।
জলখাবার(Breakfast):
পেট ভরে খেতে হবে ব্রেকফাস্ট। রাখতে পারেন ওটস, ডালিয়া, কর্নফ্লেক্স, হাতে গড়া রুটি বা চিড়ে। এই শস্যজাতীয় খাদ্যগুলি কিন্তু ফাইবারের সঙ্গে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ, এছাড়া ওটসে রয়েছে সামান্য পরিমাণে বায়োটিন, চিড়েতে ভিটামিন সি। দুধ বা ডিম খেতে পারেন। এই ২টিই কিন্তু ভিটামিনে ঠাসা। দুধে রয়েছে বি২, ৩, ৬, ৫, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন C, A, D।
আরও পড়ুন - Krishak Bondhu Prakalpa: দ্বিগুন হয়েছে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের অনুদান, জেনে নিন বিস্তারিত তথ্য
অল্প মাত্রায় ভিটামিন E,K। ডিম বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন A, D, E সমৃদ্ধ। এর সঙ্গে যে কোনও স্যালাড বা সবজি কিন্তু তালিকায় রাখতেই হবে। লাল ও কমলা সবজি থেকে বিটা ক্যারোটিন, অন্যান্য সবজি থেকে ভিটামিন C, E, K, ফলিক অ্যাসিড প্রচুর পরিমাণে পাই। সবজির মতো যে কোনও মরসুমি ফলেও রয়েছে প্রচুর মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস। লেবুজাতীয় ফল, পেয়ারা, পাকা পেঁপে, আম, তরমুজ, কালোজাম, জামরুল ইত্যাদি যেকোনও একটা ফল জলখাবার ও লাঞ্চের মাঝে খেতেই হবে। ভিটামিন C, বিটা ক্যারোটিন, E, B কমপ্লেক্স সঙ্গে প্রচুর আন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ফল আমাদের ডায়েটে অপরিহার্য।
দুপুরের খাবারে (Lunch):
ভাত ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ। সঙ্গে ডাল রাখতে পারেন। এতে ভিটামিন C রয়েছে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস মাছ। এছাড়া রয়েছে ভিটামিন D ও B কমপ্লেক্স। সব মিলিয়ে মাছের ঝোলভাত কিন্তু প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে ভিটামিনের উৎকৃষ্ট উৎস।সঙ্গে কাঁচা আমের পাতলা ঝোল থাকলে ভাল।
যা ভিটামিন C, A, B৬ ও কে সমৃদ্ধ। দুপুরের পর একগ্লাস টক দই-এর লস্যি প্রো-বায়োটিক সমৃদ্ধ। এছাড়া রয়েছে ভিটামিন B কমপ্লেক্স ও কিছুটা C ভিটামিন। সঙ্গে যদি ২-৩ টে আমন্ড যোগ করা হয় তবে তা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
সন্ধে ও রাতে (Evening and Dinner):
যে কোনও ঋতুতে সন্ধ্যায় খেতে পারেন অল্প মুড়ি বা চিড়েভাজার সাথে স্যালাড বা স্প্রাউটস। অঙ্কুরিত ছোলা বা মুগ কিন্তু ফাইবার ও ভিটামিন C সমৃদ্ধ। রাতে অনেকেই আমিষ এড়িয়ে চলেন, তার বদলে খেতেই পারেন পনির বা সয়াবিন।
পনির ভিটামিন B কমপ্লেক্সের সম্ভার। অপরদিকে সয়া চানকসে রয়েছে ভিটামিন C, K ও থায়ামিন। রাতে শোয়ার সময় প্রোটিনের চাহিদা অনুযায়ী খেতে পারেন হলুদ দুধ। প্রোটিনের সঙ্গে পাবেন প্রচুর আন্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিনও।
যখন আমরা সুষম খাদ্য থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন পেয়েই যেতে পারি, তাহলে আলাদা করে মাল্টিভিটামিন ওষুধ খাওয়া মানে নিজের শরীরকে বিপদের দিকে ঠেলে দেওয়া। তাই, প্রতিদিন এই ধরণের ডায়েট মেনে চললে এবং পরিমিত খাবার খেলে অনেকটাই ভালো থাকা যায় | সাথে নিয়মিত শরীর-চর্চা করা উচিত |
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - Weather Update: আবহাওয়া খারাপ উত্তরবঙ্গে, জেনে নিন দক্ষিণবঙ্গের অবস্থা
Share your comments