ভারত সরকারের কৃষকদের জন্য প্রচলন করা ‘প্রধানমন্ত্রী শস্য বীমা’ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে এখনও পর্যন্ত কৃষকদের থেকে প্রায় ১৪,০০০ কোটি টাকার ফসল বীমা দাবির খবর পাওয়া গেছে। নতুন ফসল বীমা প্রকল্পটি ‘এক জাতি - একটি প্রকল্প’ এই থিমের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এটি বর্তমানে পূর্ববর্তী সমস্ত স্কিমগুলির সেরা বৈশিষ্ট্যগুলি অন্তর্ভুক্ত করে এবং একই সাথে পূর্ববর্তী সমস্ত ত্রুটি অপসারণ করে সংশোধন করা হয়েছে। পিএমএফবিওয়াই বিদ্যমান দুটি প্রকল্প জাতীয় কৃষি বীমা প্রকল্পের পাশাপাশি সংশোধিত এনএআইএস প্রতিস্থাপন করবে। এই প্রকল্পের আওতায় আবেদনের মধ্যে এখন অবধি মাত্র নয় হাজার কোটি টাকার দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। সরকারী তথ্য অনুযায়ী, সর্বাধিক দাবি হিমাচল প্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের কৃষকরা করেছেন। মহামারীর এই দুঃসময়ে সরকার তাদের পাশে দাঁড়িয়ে তৎপরতার সাথে বীমার অর্থ প্রদান করেছেন এবং জরুরী অবস্থার ভিত্তিতে বাকিদেরও তা প্রদান করা হবে। তবে এখন এই প্রকল্পে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা প্রকল্পটি পূর্বে সকল কৃষকের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল, কিন্তু এখন এটি স্বেচ্ছাসেবী করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন কৃষক যদি বীমার প্রিমিয়াম ব্যাঙ্কে জমা রাখেন, তবে তিনি এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন অন্যথায় এই সুবিধা থেকে কৃষক বঞ্চিত হবেন।
নিবন্ধনের শেষ তারিখটি ৩১ শে জুলাই (Registration date, 31st July) –
আপনি যদি প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা-র সুবিধা পেতে চান, তবে খারিফ ফসলের বীমা নেওয়ার জন্য শেষ তারিখটি হল ৩১ শে জুলাই। যে ঋণী কৃষকরা বীমার সুবিধা গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক, তাদের অবশ্যই তাদের এই অন্তিম সময়সীমার ৭ দিন আগে ব্যাঙ্ক শাখাকে লিখিতভাবে আবেদন জানাতে হবে। অঋণী কৃষকরা নিজেরাই ফসল বীমার জন্য সিএসসি, ব্যাঙ্ক, এজেন্ট বা বীমা পোর্টালে করতে পারবেন।
স্কিমের পরিবর্তন –
এই বছর থেকে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা প্রকল্পটি কৃষকদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী করা হয়েছে। সহজভাবে বলতে গেলে যারা লোণ নিয়েছেন, এটি আগে তাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। এখন এটি স্বেচ্ছাসেবী অর্থাৎ যে কেউ করতে পারেন। সমস্ত কৃষককে ব্যাঙ্কে শস্য বীমার জন্য আবেদন করতে হবে। যে কৃষক ব্যাঙ্কে গিয়ে ফসলের বীমা গ্রহণ করবেন, তাদের বীমা প্রিমিয়াম বাবদ অর্থ কেটে নেওয়া হবে, ফসল বীমার সুবিধাও তিনি পাবেন। এই বীমা স্কিমে, পূর্বের মতো, সমস্ত কেসিসি হোল্ডারদের নিজস্ব ফসল বীমা হবে না বা তাদের প্রিমিয়াম কাটা হবে না। এ বছর, খারিফের জন্য ব্যাঙ্কে শস্য বীমা প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ শে জুলাই।
প্রধানমন্ত্রী শস্য বীমা যোজনা (PMFBY) কীভাবে সুবিধা পাবেন –
বীজ বপনের ১০ দিনের মধ্যে কৃষককে পিএমএফবিওয়াইয়ের আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আপনার ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হলেই বীমা সুবিধাগুলি দেওয়া হবে। বপন এবং ফসল কাটার মধ্যবর্তী সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ এবং পোকার আক্রমণে ফসলের ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। স্থায়ী ফসলের ক্ষেত্রে স্থানীয় দুর্যোগ, শিলাবৃষ্টি, ভূমিধ্বস, বজ্রপাত এবং বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়ে গেলেও কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
ফসল কাটার পর থেকে আগামী ১৪ দিন পর্যন্ত জন্য তা শুকানোর উদ্দেশ্যে জমিতে রাখা অবস্থায় প্রাকৃতিক জঞ্ঝা হলে, ঘূর্ণিঝড়, শিলাবৃষ্টি এবং ঝড়ের কারণে ফসল খতিগ্রস্থ হলে বীমা প্রতিষ্ঠানটি পৃথক ভিত্তিতে অযৌক্ত ফসলের ক্ষতিপূরণ কৃষককে দেবে। মরসুমে প্রতিকূল অবস্থার কারণে, আপনি যদি ফসল বপন করেন না, তাহলেও আপনি ক্ষতিপূরণ বাবদ উপকৃত হবেন।
প্রিমিয়ামটি কত দিতে হবে -
একজন কৃষককে খারিফ ফসলের জন্য ২% এবং রবি ফসলের ১.৫% প্রিমিয়াম দিতে হবে। পিএমএফবিওয়াই (PMFBY) প্রকল্পটিতে বাণিজ্যিক ও উদ্যানজাত ফসলের জন্য কৃষকদের ৫% প্রিমিয়াম দিতে হয়। কৃষকদের দ্বারা প্রদত্ত প্রিমিয়ামের হার ন্যূনতম এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে শস্যক্ষেত্রে ক্ষতি হলে কৃষকদের পুরো বীমা প্রদানের জন্য সরকার কর্তৃক ব্যালেন্স প্রিমিয়াম প্রদান করা হবে।
এই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণের জন্য, কৃষকের একটি ছবি, আইডি কার্ড, ঠিকানা প্রমাণ, জমির কাগজ, খসড়া নম্বর, জমিতে ফসলের প্রমাণ ইত্যাদি নথি দাখিল করতে হবে।
কৃষকরা ফসলের বীমা দাবির জন্য বীমা সংস্থা এবং কৃষি বিভাগের বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ফসলে ক্ষতির ক্ষেত্রে, ফার্ম-ভিত্তিক লোকসান দেখে টাকার পরিমাণ নির্ধারণ ও প্রদান করা হয়। বীমার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হলে কোম্পানির টোল-ফ্রি নম্বর ১৮০০২০০৫১৪২ বা ১৮০০১২০৯০৯০৯০ নম্বরে কৃষকরা যোগাযোগ করতে পারেন।
অধিক তথ্যের জন্য ক্লিক করুন প্রদত্ত লিঙ্কে - https://pmfby.gov.in/
Related link - কৃষকবন্ধু প্রকল্প (Krishakbandhu Online Application) অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া, ২০২০
#বর্ষা ২০২০- ধান উৎপাদনে (West Bengal paddy production) এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ
ইলিশে (Hilsa in Monsoon) আশায় বুক বাঁধছেন রাজ্যের মৎস্যজীবীরা, বর্ষায় খুলছে উপার্জনের পথ
Share your comments