মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছোওয়া।রেকর্ড বেকারত্ব।আর্থিক সংষ্কারের সাহসী পদক্ষেপ নাকি ৫ রাজ্যের ভোটমুখী উপহার। জোড়া প্রশ্ন চিহ্নকে সামনে রেখেই আজ বাজেট পেশে করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।আজ অর্থমন্ত্রী তার চতুর্থ কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করতে চলেছেন। বিগত প্রায় দুই বছর ধরে কোভিডে জর্জরিত ভারতীয় অর্থনীতি।এই আবহে এবছরের বাজেটে কোভিড আক্রান্ত অর্থনীতীকে চাঙ্গা করে তোলার লক্ষ্যেই বাজেট পেশ করতে পারেন অর্থমন্ত্রী।বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের মতো ইস্যুগুলির উপর নজর থাকতে পারে নির্মলার।আর নির্মলার উপর চোখ থাকবে গোটা দেশের।
ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় স্বস্তির আশা করছেন।সাধারণ মানুষ মুদ্রাস্ফীতি থেকে বাঁচতে চাইছেন। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার বাজেটে ট্যাক্স স্ল্যাব পরিবর্তন করে করদাতাদের ছাড় দিতে পারে সরকার। আসলে, সাধারণ মানুষ শেষবার আয়কর ছাড় পেয়েছিল আট বছর আগে। ২০১৪ সালে, সরকার আয়কর ছাড়ের সীমা ২ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২.৫ লক্ষ টাকা করেছে। একই সময়ে, ৬০ থেকে ৮০ বছর বয়সী নাগরিকদের জন্য কর ছাড়ের সীমা ২.৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। এবারও বাজেটে করদাতারা বড় ধরনের ছাড় পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবারই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথা বলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু। চলতি বাজেট অধিবেশনে কী কী পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের, সেই বিষয়েও আলোচনা করা হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিযুষ গোয়েল জানান, যেহেতু এবারের বাজেট অধিবেশনের প্রথম অংশের মেয়াদ ছোট, সেই কারণে এই অংশে কোনও আইনি প্রস্তাব বা বিল পেশ করা হবে না। তিনি আরও জানান, বাজেট অধিবেশনের প্রথম অংশে রাজ্যসভায় কেবল দুবারই বিতর্ক আলোচনার সুযোগ থাকবে, রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও কেন্দ্রীয় বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করার পর।
দীর্ঘমেয়াদী মূলধনে কর থেকে কি মিলবে মুক্তি?
২০১৮ সালের অর্থ আইনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে চেপেছিল দীর্ঘমেয়াদী মূলধনে কর বা লং টার্ম ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স। এই আইনের জেরে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছিল বিনিয়োগকারীদের মনোবল। বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতিতে এই দীর্ঘ মেয়াদী মূলধন করের কোনও অস্তিত্ব নেই, ভারতেও অর্থনীতিককে ঘুরে দাঁড়াতে এই কর থেকে মুক্তির দাবিই জানিয়েছেন বিনিয়োগকারী-অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুনঃ করোনার কোপ কাটিয়ে অবশেষে রাজ্যে খুলছে স্কুল, ঘোষণা মুখমন্ত্রীর
বাজেট পেশের ২৪ ঘণ্টা আগে, সোমবার অর্থমন্ত্রী সংসদে যে আর্থিক সমীক্ষা পেশ করেছেন, সেখানে সবথেকে বেশি আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে মূল্যবৃদ্ধি নিয়েই। খাদ্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিই আর্থিক বৃদ্ধিতে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা—এই সারসত্যটা স্বীকার করা হয়েছে আর্থিক সমীক্ষায়। কেন দেশের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না, দীর্ঘ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তার। কেন্দ্রের রিপোর্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, আগামী আর্থিক বছরে মূল্যবৃদ্ধির ছায়া আরও প্রলম্বিত হবে। ঠিক এই কারণেই এবার করদাতাদের হাতে অতিরিক্ত অর্থ পৌঁছে দিতে হবে বলে মনে করছে অর্থনৈতিক মহল।
আরও পড়ুনঃ ক্ষেতে লাঙ্গল-বপনের কাজ করবে অটোনোমাস ট্রাক্টর
তবে এবারের বাজেট অধিবেশন উত্তপ্ত হতে পারে। কোভিড থেকে পেগাসাস সব কিছু নিয়েই বিতর্ক হতে পারে। বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে অর্থনৈতিক অগ্রসরতার ক্ষেত্রে কোবিন্দের মুখে মোদি সরকারের প্রশংসা হয়ে উঠতে পারে বিরোধীদের চক্ষুশূল৷
Share your comments