এই প্রতিবেদনে এমন এক কৃষকের সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরা হবে যিনি একইসঙ্গে কৃষকাজ এবং পশুপালন করে দেখেছেন সাফল্যে মুখ৷ তার এই সাফল্য (Successful Farmer) অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে৷ উত্তরপ্রদেশের এই কৃষক এমন কী করলেন, কোন পন্থায় তিনি দেখলেন সাফল্যের মুখ চলুন জেনে নেওয়া যাক৷
উত্তরপ্রদেশেরে বঘোলি ব্লকের সিকোহরা গ্রামের বাসিন্দা গোবিন্দ চৌধুরী একইসঙ্গে চাষ এবং পশুপালন (Animal Husbandry) করে নিজের ভাগ্য যেন নিজেই গড়ে নিয়েছেন৷ পেয়েছেন প্রচুর মুনাফা৷ তার এই কাজে অংশীদার হয়েছেন আরও বহু বহু কৃষক৷
২৬ বছর বয়সী গোবিন্দ চৌধুরী ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন৷ তাঁর বাবা রাম নরেশ ঔরঙ্গাবাদে একটি টাইলস-এর কোম্পানিতে কাজ করেন৷ গোবিন্দ ৬ বছর আগে বাবার কাছে থেকে ওই টাইলস কোম্পানিতে কাজ করেছিলেন৷ কিন্তু এই কাজে তার মন বসেনি, তাই তিনি সে সব ছেড়ে ফের গ্রামে চলে আসেন৷
গোবিন্দ চৌধুরীর আত্মীয় হরিপ্রসাদ চৌধুরী কৃষিকাজের সঙ্গে ওতোপ্রোতোভাবে যুক্ত৷ তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কৃষিকাজ শুরু করেন গোবিন্দ৷ এই কৃষকের মতে, তাঁর একান্নবর্তী পরিবার৷ তাঁর কাছে প্রায় ১৪ বিঘা চাষের জমি রয়েছে৷ তার মধ্যে ৫ বিঘা জমিতে ফুলকপি, বেগুন, টমেটো, মুলো, লাউ প্রভৃতি চাষ করেন৷ জানা যায়, প্রথমে তিনি আড়তে গিয়ে সবজি বিক্রি করতেন, তবে তাতে সবজির উচিত মূল্য তিনি পেতেন না৷ এরপর তিনি দুটি সবজি মান্ডিতে গিয়ে সবজি বিক্রি করেন, যার থেকে তিনি প্রচুর মুনাফা (Profit) অর্জন করেন৷
তবে এখানেই শেষ নয়৷ এর সঙ্গে তিনি পশুপালনও (Animal Husbandry) করতে থাকেন৷ তাঁর কাছে ৫ টি মোষ রয়েছে, যেখানে থেকে প্রায় ২৫ লিটার দুধ আসে৷ এর মধ্যে ১৫ লিটার দুধ তিনি বিক্রি করেন, যেখান থেকে পান প্রায় ৬০০টাকা প্রতিদিন৷ তাঁর সবজির খেত থেকে ফসলের অবশিষ্টাংশ তিনি পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন৷ এর ফলে একদিকে যেমন পশুদের খাদ্যমান নিয়ে দুশ্চিন্তা কম থাকে, তেমনই খাদ্যের পিছনে অতিরিক্ত ব্যয়ও হয় না৷
প্রথমে তাঁর সঙ্গে ১০ জন কৃষক কাজ করতেন৷ ধীরে ধীরে তা বাড়তে বাড়তে বর্তমানে প্রায় ৭০০-র ঘরে সেই সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে৷ তাঁদের নিজস্ব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও রয়েছে, যেখানে তাঁরা চাষবাস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করে থাকেন৷ এছাড়া কৃষিবিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে এবং বিভিন্ন বীজ কোম্পানির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখেন তাঁরা৷ কৃষি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে তা কৃষেকাজে প্রয়োগ করেন, যার ফলে কৃষিক্ষেত্রে প্রচুর লাভ হয়৷
এই কৃষক তার জমি থেকে প্রতি বছর প্রায় ৫ লক্ষ টাকা উপার্জন করেন৷ এছাড়া অন্যান্য কৃষকদের ফসল বিক্রি করেও প্রায় ৫ লক্ষ টাকা উপার্জন করেন৷ বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে গোবিন্দ চৌধুরীর এই প্রচেষ্টা এবং সাফল্যের কথা অন্যদেরও উৎসাহিত করবে৷
বর্ষা চ্যাটার্জি
আরও পড়ুন- মাছ চাষ (Fisheries) করে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা উপার্জন, কৃষকের সাফল্য অনুপ্রেরণা জোগাবে আপনাকেও
Share your comments