কৃষক আব্দুর রশিদ ঝিনাইদহে চাষ করেছেন মিষ্টি আঙ্গুর | ঝিনাইদহে বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী উপজেলা মহেশপুরের যুগিহুদা গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ বিদেশি জাতের আঙুর চাষ করে সফল হয়েছেন। এর আগে বিভিন্ন এলাকায় আঙুর চাষ হলেও তা সুস্বাদু না হওয়ায় কেউই দ্বিতীয়বার চাষ করেননি। তবে আব্দুর রশিদ এবারই প্রথমবার চাষে সফল হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। জমিতে গাছ রোপণের মাত্র ৭ মাসে ফল আসতে শুরু করে। ৯ থেকে ১০ মাসের মাথায় আঙুর পরিপক্ক হয়েছে। কৃষক আব্দুর রশিদের দাবি বাজারে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন জাতের বিদেশি আঙুরের চেয়ে তার জমির পাকা আঙুরের স্বাদ ভালো।
তার বাগানে উৎপাদিত আঙুর (Grapes cultivation)২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। গত ১৫ দিনে প্রায় ৩ মণ আঙুর বিক্রি করেছেন। তার ১০ কাঠা জমি থেকে আরো ১০ থেকে ১২ মণ আঙুর বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। ১০ কাঠা জমিতে ছমছম ও সুপার সনিকা জাতের ৭৫টি আঙুরের গাছ রোপণ করেছেন তিনি। ভারত ও ইটালি থেকে এসব চারা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাকে দেখে এলাকার বহু যুবক এগিয়ে আসছে এই চাষে |
তার সাফল্যের গল্প (Success-story):
মূলত, আব্দুর রশিদ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যুগিহুদা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। তার শখ হলো কৃষিক্ষেত্রে নতুন নতুন সবজি, ফল ও ফসলের চাষ করা | এছাড়াও, তিনি কোনো অঞ্চলে নতুন কোনো চাষের সংবাদ পেলে নিজে গিয়ে দেখে আসেন | চলতি মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে গোল্ডেন কালারের নতুন জাতের তরমুজ তৃপ্তি চাষ করে সফলতা দেখিয়েছেন | মাত্র ২ মাসের এ চাষে খরচ বাদে দেড় লাখ টাকা লাভ করেছেন। আঙুরের পাশাপাশি তার ৫ বিঘা জমিতে রয়েছে মাল্টা ও কমলা লেবু |
কিভাবে তিনি চাষ করেন (Farming process):
কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, গত ৭ মাস আগে তিনি তার ১০ কাঠা জমিতে ছমছম, সুপার সনিকা, কালো জাতসহ কয়েকটি জাতের ৭৫টি আঙুর চারা রোপণ করেন। তিনি এই চারাগুলো ভারত এবং ইতালি থেকে সংগ্রহ করেন। ৭ মাস পরিচর্যার পর তার অধিকাংশ গাছেই ব্যাপক আঙুর ফল ধরে। তিনি জানান, প্রতিটি গাছে ৮ থেকে ১০ কেজি করে আঙুর ধরেছে।
মহেশপুর উপজেলায় তিনি প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আঙুর চাষ করছেন। বিভিন্ন সময় তিনি ইউটিউবে আঙুর, তরমুজ, কমলা চাষের ভিডিও দেখে আগ্রহী হন। আঙুর চাষে সফল হওয়ায় চাষ সম্প্রসারণে আরো কয়েক বিঘা জমিতে আঙুর গাছের চারা রোপণ করছেন। আঙুর গাছে ফল আসার পর পাকতে সময় লাগে ৩ থেকে ৪ মাস। তার দাবি বাংলাদেশের মাটিতে সুস্বাদু আঙুর চাষে তিনিই প্রথম সফল হয়েছেন।
আরও পড়ুন - মাছ চাষ করে সারা রাজ্যে আজ আরতী বর্মন মহিলাদের কাছে এক আইকন
মহেশপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অমিত বাগচী জানান, এর আগে অনেকে আঙুর চাষ করলেও স্বাদ ভালো হয়নি | এই প্রথম তার জমিতে আঙুরের স্বাদ খুব ভালো হয় | ইতিমধ্যেই তাকে দেখে এগিয়ে এসেছে অনেকে | বহু বেকার যুবক যুবতী তার কাছে প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন | ফলত, গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিকাশও ঘটবে বলে আশা করা যায় |
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - জৈব তরমুজ চাষে লাভ ২ লক্ষ টাকা! জেনে নিন এক শিক্ষিকার সাফল্যের গল্প
Share your comments